বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে কিংবা পরে নিশ্চয়ই, মার্কেটিং পড়ে ক্যারিয়ার কি কি করা যাবে? এই প্রশ্নটি মাথায় ঘুরপাক খায়। আপনি মার্কেটিং নিয়ে পড়ছেন আর ভাবছেন, এতে কি আদৌ কোন ভালো ক্যারিয়ার আছে! আমার কি ভালো কোন জব হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
চিন্তার কারণ নেই, আপনি অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারবেন। এখন বাজারে মার্কেটিং এরই রাজত্ব চলছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো একদম মার্কেটিং এর কথা উল্লেখ করে দেয়, একদম মার্কেটিংই প্রেফার করা ই থাকে।
লেখার সূচিপত্র
মার্কেটিং কি?
মার্কেটিং হলো কমার্সের একটি বিষয়, এই ক্ষেত্রে মূলত বাজার ব্যবস্থা এবং বিপণন সম্পর্কে বিস্তারিত শিখানো হয়। কিভাবে পণ্যের বিক্রয় বাড়ানো যায়? কিভাবে ক্রেতা দের আকর্ষণ করা যায়? এই সব কৌশল শিখানো হয়।
তাই, মার্কেটিং বিভাগকে এখন বাণিজ্যিক মনস্তত্ত্ব বিভাগও বলা হয়। তাহলে মার্কেটিং এ পড়ে ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা করার দিন শেষ। আপনার জন্য অনেক সুযোগ অপেক্ষা করছে।
মার্কেটিং এর কাজ কেমন?
কোম্পানিতে আপনার পজিশন আপনার দক্ষতা সেট এবং ব্যবসার প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। কেউ কেউ হয়ত সোশ্যাল মিডিয়া কমিউনিটির মধ্যে কাজ করছে, যেখানে অন্যরা হয়ত কোডের মাধ্যমে কাজ করছে, অথবা হয়তো অনলাইনে বিজ্ঞাপন চালাচ্ছে।
কাজের উপর নির্ভর করে, চাকরির পদবীর ধরন এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। মার্কেটিং এ ভালো ক্যারিয়ারের জন্য নির্দিষ্ট শিল্প জ্ঞান যেমন:
- ভোক্তা আচরণ
- বিক্রয়, বাজার গবেষণা
- প্রতিযোগী বিশ্লেষণ
এবং অন্যদের মধ্যে সৃজনশীলতা প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে,ইফেক্টটিভনেস বোঝার জন্য। এই ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু কিছু নিয়োগকর্তা ফ্রেশারদের ও সুযোগ দেয়। মার্কেটিংয়ে সফল হওয়ার উপায়
মার্কেটিং পড়ে ক্যারিয়ার কি কি করা যাবে?
১. শিল্প প্রতিষ্ঠান
যারা মার্কেটিংয়ে পড়েছেন, তারা খুব সহজেই বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে জব পেতে পারেন। অনেক ইন্ডাস্ট্রির মালিকেরা তাদের পণ্যের মার্কেটিংয়ের জন্য স্পেশালি মার্কেটিং বিভাগের স্টুডেন্ট প্রেফার করে। কারণ, এই বিভাগের স্টুডেন্টরা বাজারের অবস্থা ভালো বুঝে।
২. ব্যাংক
কমার্সের স্টুডেন্টদের জন্য ব্যাংকিং প্রফেশন বেস্ট অপশন। এই ক্ষেত্রে মার্কেটিং এর স্টুডেন্টরা অনায়াসেই চাকরি পেয়ে যাবে। আর মার্কেটিং এর স্টুডেন্টরা অন্যান্য বিভাগের স্টুডেন্টদের থেকে ব্যাংকিং বুঝে ভালো।
৩. বীমা কোম্পানি
বর্তমানে বিভিন্ন বীমা কোম্পানি স্পেশাল প্রেফারেন্সে মার্কেটিং এর স্টুডেন্ট চায়। কারণ এই বিভাগের স্টুডেন্ট রা বিভিন্ন অফার পাবলিকের কাছে মেলে ধরতে পারে এবং তারা এই সব বিষয়ে কৌশলী হয়।
৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
যদি আপনার সিজিপিএ ভাল হয় তাহলে, আপনি যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর প্রভাষক হয়ে যেতে পারবেন। অথবা স্কুল কলেজের শিক্ষক হয়ে যেতে পারেন, তাহলে আপনি এইখানে শিক্ষকতার ও সুযোগ পাচ্ছেন।
৫. অনলাইন জব
এই ডিজিটাল যুগে অনলাইন জবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। অনলাইনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া, পণ্যের বাজার তৈরি করা, ক্রেতাদের চাহিদা বোঝা,এই সবের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জব সার্কুলার দেয়, সেখানে স্পেশাল প্রেফারেন্স দেওয়া হয়। এছাড়া, আপনার যদি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দক্ষতা থাকে তাহলে তো কথাই নাই।
মার্কেটিংয়ের জন্য অনলাইনে জব করার কিছু ওয়েবসাইট:
মার্কেটিং বিভাগের স্টুডেন্টরা এই সব ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারে। মার্কেটিং পড়ে ক্যারিয়ার কি কি করা যাবে? এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
সবচেয়ে ভালো সুযোগ হলো, নিজেরাই একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। কমার্সের অন্য বিভাগের তুলনায় মার্কেটিং এর স্টুডেন্ট দের জন্য নিজস্ব বিজনেস শুরু করা সহজ। কারণ তাদের বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে, তারা বাজার বৃদ্ধি করার প্রসেস ও জানে।
তারা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য জোগান দিতে পারে। তারা ক্রেতা দের মানসিকতা বুঝতে পারে, তারা ঝুঁকি নিতে ও মানসিক ভাবে বেশি প্রস্তুত থাকে।তাই তাদের বিজনেসে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সুতরাং তারা নিজেদের বিজনেস শুরু করার মাধ্যমে নিজেদের তথা অন্যের ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।

এছাড়া আরও কিছু পদেও কাজ করার সুযোগ আছে। যেমনঃ
- মার্কেট এনালিস্ট
- প্রডাক্ট ম্যানেজার
- স্যালস ম্যানেজার
- প্রডাক্ট এনালিস্ট
এখন মার্কেটিং পড়ে অনেক সুযোগ আছে, ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার, সুতরাং হতাশ হবার দরকার নেই। অন্তত, মার্কেটিং পড়ে ক্যারিয়ার কি কি করা যাবে এ নিয়ে ভাবতে হবে না।
মার্কেটিং এ ভালো ক্যারিয়ারের জন্য কি কি প্রয়োজন?
মার্কেটিং এ ক্যারিয়ারের অনেক সুযোগ রয়েছে। আপনি যদি মার্কেটিং পেশায় আগ্রহী হন, তাহলে আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে কোন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড প্রয়োজন। মার্কেটিং এর মধ্যে আপনি যে নির্দিষ্ট কর্মজীবনের পথটি গ্রহণ করবেন তা অবশ্যই এটিকে সফল করার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট কে প্রভাবিত করবে।
নিয়মিত চাকরির খবর রাখতে পারেন। এজন্য, চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকা এর আপডেট লেখাটি পড়তে পারেন।
সাধারণত, একটি এন্ট্রি-লেভেল এ মার্কেটিং এর পজিশন পাওয়ার জন্য মার্কেটিং বা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। যেহেতু বিপণন-কারীরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সংস্থায় বিভিন্ন ভূমিকা মোকাবেলা করে, ডিগ্রি প্রোগ্রামগুলি বিপণন দক্ষতা এবং কৌশলগুলির শানিত-করনের উপর ফোকাস করে। তথ্যের এই বিন্যাস উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিপণন-কারীদের তাদের কাজগুলিকে আরও কার্যকর-ভাবে এবং সফলভাবে সম্পাদন করতে সহায়তা করবে।
একটি মার্কেটিং এ ব্যাচেলর প্রোগ্রামের মাধ্যমে, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উপ-ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য প্রস্তুত হয়। সাধারণত, একটি স্নাতক প্রোগ্রাম মার্কেটিং-এ ব্যাচেলর অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা মার্কেটিং-এ ব্যাচেলর অফ আর্টসের দিকে নিয়ে যায়। মার্কেটিং এর একজন শিক্ষার্থী যে সাধারণ কোর্সগুলি গ্রহণ করতে পারে সেগুলির মধ্যে রয়েছে:
- কৌশলগত ব্যবস্থাপনা
- বিপণন কৌশল
- পরিমাণ-জ্ঞাপক বিশ্লেষণ
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- ভোক্তা আচরণ
সঠিক শিক্ষাগত কন্টেন্ট এর পাশাপাশি, পেশাদার বিপণন-কারীদের অবশ্যই কিছু দক্ষতা থাকতে হবে, যেমন আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় বাজার বিশ্লেষণ করার এবং অর্থনৈতিক প্রবণতা এবং উন্নয়নগুলি অনুসরণ করার ক্ষমতা।
উপরন্তু, অনেক বিপণন পেশাদার একটি দলের পরিবেশে কাজ করে, তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ যে একজন নেতা এবং একজন দলের খেলোয়াড় হিসাবে আপনার কেমন দক্ষতা রয়েছে। একজন মার্কেটারের কাজের অংশ হল ভোক্তাদের সাথে যোগাযোগ করা। এটি ভাল করার জন্য, আপনার শক্তিশালী লিখিত এবং মৌখিক যোগাযোগের দক্ষতা থাকা আবশ্যক।
বিজ্ঞান পড়েন নি, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেননি বলে আপনি জীবনে আর কিছু করতে পারবেন না। এইরূপ ভাবার কারণ নেই। বরং ভাবুন আপনি আরও বড় ক্ষেত্র পেলেন নিজেকে যাচাই করার। আপনার কাজ করার ক্ষেত্র আরও প্রসার হলো। আপনি আউট অফ দ্য বক্স চিন্তা করতে পারবেন, নিজের সুবিধা মত ক্যারিয়ার বাছাই করতে পারবেন।।
বর্তমানে বরং সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড এর স্টুডেন্ট রা, বি.বি.এ তে বেশি পড়াশোনা করছে,নিজেদের ক্যারিয়ার বিজনেস ফিল্ড এ গড়ার জন্য, অনেকে তো মার্কেটিং এর উপর কোর্স ও করছে, কারণ এই ক্ষেত্রে সুযোগ বেশি। তাহলে বুঝতেই পারছেন মার্কেটিং কত ডিমান্ডিং। সুতরাং হতাশ না হয়ে পরিশ্রম করে যান, নিজের উপর ভরসা রাখুন,দেখবেন খুব ভালো করতে পেরেছেন জীবনে। ইনশাহ আল্লাহ।
উপসংহার
এই ছিল আজকে মার্কেটিং পড়ে ক্যারিয়ার কি কি করা যাবে এই নিয়ে সংক্ষিপ্ত লেখা। আশা করি, আপনার মনের ক্ষুধা কিছুটা হলেও কমাতে পেরিছি। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।