আমরা আজকের এই লেখায় কোন ব্র্যান্ডের ফোনের ক্যামেরা ভালো তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এটা সত্য, মার্কেটে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের ফোন আছে যাদের ক্যামেরা অসাধারণ। তবে আপনার জন্য বেস্ট কোনটা হবে, সেটা নির্ভর করবে আপনার বাজেট এবং চাহিদার উপর।
তাই, এই লেখায় আমি সবগুলো সেরা ব্র্রান্ডের ক্যামেরা ফোনের দাম, ফিচার ও সুবিধা নিয়ে আলোচনা করবো যাতে আপনার পছন্দ করতে সুবিধা হয়। এই লেখায় আমরা শুধু ৩টি ব্রান্ডের ফোনের ক্যামেরার খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করবো এবং সর্বশেষে আমাদের মতামত তুলে ধরবো।
লেখার সূচিপত্র
কোন ব্র্যান্ডের ফোনের ক্যামেরা ভালো
১. অ্যাপল আইফোন
- মডেল: Apple iPhone 15 Pro Max
- দাম: ১,৪৫,০০০ টাকা
Apple iPhone 15 Pro Max কি কি ফিচার রয়েছে। যথা:
- 48MP মেইন ক্যামেরা যার সেন্সর সাইজ 1/1.28-ইঞ্চি।
- 12MP আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স।
- 12MP পেরিস্কোপ টেলিফটো লেন্স (5x অপটিক্যাল জুম)
সেন্সর সাইজ বড় হওয়াতে কম আলোতে ভাল ছবি তুলতে পারে আইফোন। OIS থাকার কারণে হাতের কাঁপা কাপির কারণে ছবি বা ভিডিওতে ঝাঁকুনি দেখায় না। এছাড়া, LiDAR স্ক্যানার থাকার কারণে দ্রুত অটোফোকাস করতে পারে। তবে আইফোনে সর্বচ্চো 4K ভিডিও করা যায়।
সবচেয়ে বড় কথা আইফোন হলো একটা ভাবস! আপনার আইফোন আছে মানেই আপনার একটা আলাদা ভাব! তাই, বন্ধুদের ভাল ছবি তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে চাইলে আইফোন কিনতে পারেন।
অতিরিক্ত কিছু ফিচার যথা:
- সিনেমাটিক মোড: প্রফেশনাল সিনেমার মত যদি ভিডিও করতে চান তাহলে এটা অনেক জোস একটি ফিচার। যা আইফোনে রয়েছে।
- ম্যাক্রো: এই মোডে ছোট ছোট বিভিন্ন কিছুর ক্লোজ-আপ ছবি তুলতে পারবেন।
- অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফি মোড: রাতের আকাশের পারফেক্ট তারা বা চাঁদের ছবি তুলতে চাইলে আইফোন কিনতে পারেন।
২. স্যামসাং
- মডেল: Samsung Galaxy S24 Ultra
- দাম: ১,০৭,৫০০ টাকা
Samsung Galaxy S24 Ultra কি কি ফিচার রয়েছে। যথা:
- 200MP প্রধান লেন্স (1/1.35-ইঞ্চি সেন্সর সহ)
- 50MP 5x অপটিক্যাল জুম পেরিস্কোপ টেলিফোটো লেন্স
- 12MP আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স
- 10MP টেলিফটো লেন্স
Samsung Galaxy S24 Ultra এর সেন্সর সাইজও বড় তাই কম আলোতে ভাল ছবি তুলতে পারে। আর এটাতেও OIS আছে তাই নাচাতে নাচতে ছবি বা ভিডিও করতে পারবেন। আর এটাতেও LiDAR স্ক্যানার রয়েছে যা দ্রুত অটোফোকাস করতে পারে। এই যে ফেসবুকে মাঝে মাঝে চাঁদের ছবি দেখেন। সেই ছবিগুলো খুব স্মুথ ভাবে আপনি Samsung Galaxy S24 Ultra দিয়ে তুলতে পারবেন। যা বাকী ২টি ফোন দিয়ে সম্ভব না।
ও আরেকটা কথা এটা কিন্তু 8K তে ভিডিও রেকোর্ড করতে পারে। এটা কিন্তু আপনি আইফোনে পাবেন না। ছবি এডিট করার সফটওয়্যার।
অতিরিক্ত কিছু ফিচার যথা:
- নাইটফোটোগ্রাফি।
- 100x পর্যন্ত ডিজিটাল জুম
- পোর্ট্রেট মোড
- প্রো মোডে মনের মত করে এপারচার, সাটার কাউন্ট থেকে শুরু করে DSLR এর মত সব কিছু কন্ট্রোল করতে পারবেন।
৩. গুগল পিক্সেল
- মডেল: Pixel 8 Pro
- দাম: ৮৪,৫০০ টাকা
Pixel 8 Pro কি কি ফিচার রয়েছে। যথা:
- 50MP প্রধান লেন্স (1/1.28-ইঞ্চি সেন্সর সহ)
- 48MP আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স
- 12MP টেলিফটো লেন্স (30x অপটিক্যাল জুম)
আগেই বলে নেই আপনার যদি বাজেট কম থাকে তাহলে আপনার জন্য এই ফোনটি। একটা কথা মাথায় রাখবেন শুধু মেগাপিক্সেলই কিন্তু ভাল ছবি তুলে না। মোবাইলের প্রোসেসর এবং সফটওয়্যারও কিন্তু ভাল ছবি তুলতে সাহায্য করে।
আর, পিক্সেলে এই সুবিধাটি খুব ভাল মতই পাবেন। যদিও বাংলাদেশের অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছে তাদের ফোনে নেটওয়ার্ক থাকে না মাঝে মাঝে এছাড়া, অনেক গরম হয়ে যায় ফোন মাঝে মাঝে।
উপরের ২টি ফোনের মত এটার সেন্সরও বড় এটাতেও OIS আছে এবং অটোফোকাস করার সিস্টেম আছে। মোবাইলে ভিডিও এডিট করার সফটওয়্যার।
অতিরিক্ত কিছু ফিচার যথা:
- Magic Eraser: ছবি যেকোন কিছু দ্রুত মুছে ফেলার দারুন একটি টুলস।
- Real Tone: আপনার ত্বকে কোন মেকআপ না করে একদম রিয়াল ছবি তুলতে পারবে।
- Night Sight: কম আলোতে বা রাতে পারফেক্ট ছবি তুলতে এই ফিচার বেশ কাজের।
- Astro Photography: রাতের আকাশের চাঁদ-তারার ছবি তুলতে এই ফিচার বেশ কাজের।
- Portrait Mode: ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করে পোর্ট্রেট তুলতে সবাই এই ফিচারটি ব্যবহার করে।
মতামত
সত্যিকার অর্থে আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না যে আপনি এই ফোনটি কিনেন। কেননা, আপনার চাহিদা আর প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে আপনাকেই পছন্দ করতে হবে। তবে অনেকের মতে ভিডিওর জন্য আইফোন ভাল এবং ক্যামেরার জন্য স্যামসাং।
আর যাদের বাজেট কম তাদের জন্য গুগল পিক্সেল ৮ প্রো। তবে একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন, আইফোনের অপারেটিং সিস্টেম আইওএস সুতরাং আপনি আইওএস ব্যবহারে অভ্যস্ত কিনা এটাও খেয়াল রাখতে হবে।
Apple iPhone 15 Pro Max | Samsung Galaxy S24 Ultra | Pixel 8 Pro |
---|---|---|
সুবিধা | সুবিধা | সুবিধা |
ভিডিও কোয়ালিটি অনেক ভাল | ডুয়াল টেলিফোটো লেন্স রয়েছে | দাম কম |
রাতে ও কম আলোতে অনেক ভাল ছবি | 100x জুম | কালার একুরেসি, ডাইনামিক রেঞ্জ ভাল এবং দ্রুত অটোফোকাস করতে পারে |
ইমেজের ডিটেইল ভাল | ম্যানুয়াল কন্ট্রোল এবং এডিট অপশন রয়েছে। | Magic Eraser, Real Tone, Night Sight, Astro Photography এর মতো ফিচার |
অসুবিধা | অসুবিধা | অসুবিধা |
দাম বেশি | দাম বেশি | ভিডিওর মান আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের তুলনায় খারাপ |
কম জুম ক্ষমতা | কালার একুরেসি কিছুটা কম | কম জুম ক্ষমতা |
কম রেজোলিউশনের সেন্সর | ভিডিওর মান আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের তুলনায় কিছুটা কম | সিনেমাটিক মোড নাই। |
পরিশেষে
আশা করি, কোন ব্র্যান্ডের ফোনের ক্যামেরা ভালো এই নিয়ে আপনার মনে থাকা প্রশ্নগুলোর উত্তর কিছুটা হলেও দিতে পেরেছি। যদি আপনার নিকট মনে হয়, আপনার সময় নষ্ট হয়েছে তাহলে কমেন্টে গালি বাদে অন্য কিছু বলে যান। আর নতুন ফোনের আপডেট আসলে যোগ করা হবে ইনশা আল্লাহ