বিদ্যুাৎ বা electricity আমাদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। এই বিদ্যুৎ ফ্রি পাওয়া যায়। এর জন্য মাস গেলে টাকা দিতে হয়। অনেকের আবার এই বিল অনেক বেশী চলে আসে। অথচ একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় জেনে রাখলে। অনেকাংশেই বিদ্যুৎ বিল কমানো যায়।
আপনি দৈনন্দিন জীবনের সামান্য কিছু পরিবর্তন, সময়ের সাথে সাথে আপনার জীবন এবং আপনার আর্থিক অবস্থার উপর একটি বড় প্রভাব ফেলে। আপনি যদি ভাল কোন পরিবর্তন আনেনে তাহলে, সময়ের সাথে সাথে বেশি বেশি লাভবান হতে পারবেন।
বিদ্যুতের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করে তার বিল হ্রাস করতে পারা; প্রতি মাসে অর্থ সাশ্রয়ের একটি সুন্দর উপায়। আপনি যদি সাবধানতার সাথে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাহলে, আপনি অনেক টাকা বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারবেন।
তার সাথে সাথে সঞ্চয় ও করতে পারবেন। আপনি এর মাধ্যমে সারা বছরে লাভবান হবেন। আজকের এই লিখা টি আপনাকে বিদ্যুৎ বিল কিভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে জানাবে, তাহলে আসুন এখন জানা যাকঃ
লেখার সূচিপত্র
বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়
১. অযথা ঘরের বাতি জ্বালিয়ে রাখা যাবেনা
একদম সহজে, বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় হল অযথা কোন বৈদ্যুতিক জিনিস চালু না রাখা। অনেকের ই ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আলো জ্বালিয়ে রাখার বদ অভ্যাস রয়েছে।
বাচ্চারা যদি এই কাজ করে থাকে তাহলে, তাদের অবশ্যই লাইট বা অন্য জিনিসগুলো বন্ধ করার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে। শেখাতে হবে যে, এতে অপচয় হয়। আলো বন্ধ করার জন্য তাদের ঘরে ফেরত পাঠাতে হবে। মানে সোজা কথা হল, ঘরে কেউ না থাকলে আলো জ্বালিয়ে রাখা যাবে না।
তবে সবচেয়ে ভাল হয়, এনার্জি সেভিং ও এলইডি লাইট ব্যবহার করা।
২. অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং ইলেকট্রনিক্স আনপ্লাগ করে রাখা
অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং ইলেকট্রনিক্স আনপ্লাগ করে রাখতে হবে। “বিদ্যুতের ভ্যাম্পিরিয়াম” নামে একটি ঘটনা রয়েছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ না হলে তা বিদ্যুৎ চার্জ কাটে। বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় হিসাবে এই টিপসটি অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
বিদ্যুতের প্রবাহ পুরোপুরি এড়ানোর একমাত্র উপায় হল, ইলেকট্রনিক্স সংযোগ বন্ধ করে রাখা। এর জন্য স্মার্ট স্ট্রিপগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। আর যেখানে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র ব্যবহারের বিকল্প আছে, সে ক্ষেত্রে বিকল্প পন্থা ব্যবহার করাই উত্তম। যেমন,
ওয়াশিং মেশিন না ব্যবহার করে বাড়ির উঠোনে একটি কাপড়ের লাইন সেট আপ করে, এবং তার মাধ্যমে কাপড় লন্ড্রি করা যেতে পারে এবং নিজের হাতে কাপড় ধোঁওয়া যেতে পারে।
যদি বাসায় যদি জায়গা না থাকে তবে শুকনোর জন্য শাওয়ার রডের উপর কাপড় ঝুলিয়ে রাখা যেতে পারে।
বাসন প্ত্র ধুতে ডিশওয়াশার ব্যবহার করা বিদ্যুৎ এবং পানি সাশ্রয় করার অন্যতম উপায়, এছাড়া এর সাথে সামগ্রিক ইউটিলিটি বিলও হ্রাস করা সম্ভব।
৩. এসির পরিবর্তে ফ্যান ব্যবহার
যদি সম্ভব হয়, তাহলে এয়ার কন্ডিশনারের পরিবর্তে ফ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্যান কম পাওয়ার ব্যবহার করে, তাই এটি বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করবে এসির থেকে। যেমন, চিলেকোঠার ফ্যান আপনার বাড়িতে শীতল বাতাস বিয়ে আনবে এবং গরম বাতাস অপসারণ করতে সহায়তা করবে, সাথে বিদ্যুৎ বিল ও বাচাবে। অন্য দিকে,এ সি তে তাপমাত্রা বাড়াতে কমাতে হয় যা অনেক বিদ্যুৎ খরচ করে।
এয়ার কন্ডিশনার কিভাবে কাজ করে? এটা জানলে এসি সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা হবে আশা করি। আর বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় সম্পর্কেও ধারণা হবে।
গ্রীষ্মে সূর্যের আলোর তাপ থেকে বাচার জন্য জানালায় ব্লাইন্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বাড়ি ঠান্ডা করার জন্য রাতে জানালা খুলে রাখতে হয় এবং দিনে জানালা খোলা রাখতে হয় গরম বাতাস বাইরে রাখার জন্য। এতে ঘর ঠাণ্ডা থাকবে এয়ার কন্ডিশনের দরকার পড়বে না, ফ্যানেই কাজ হবে।
৪. মাইক্রোওয়েবের ব্যবহার কমানো
রান্নার আগে রেফ্রিজারেটর থেকে খাবার বের করে রাখতে হবে এবং বরফ গলাতে হবে, এতে করে তাড়াহুড়ো করে বরফ গলানোর জন্য মাইক্রোওয়েভ করতে হবে না এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।
ওভেনের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে অভেনেওভেনের দরজা যখন তখন খোলার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে, কারণ অকারণে ওভেনের দরজা খুললে তাপমাত্রা বের হয়ে যায়, ফলে পরবর্তীতে তা গরম হতে অনেক সময় নেয় যা বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে, এই বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
নরমাল বা অল্প খাবার তৈরি করার জন্য বড় আকারের ওভেনের ব্যবহার না করে কোন টোস্টার ওভেন বা কুকার ব্যবহার করা যেতে পারে। এই দুটি সরঞ্জামই অনেক কম বিদ্যুৎ খরচ করে।
তার উপরে, দেখা যায় যে তারা কম তাপমাত্রা উৎপাদন করে ঘর ও তেমন গরম করেনা, যার কারনে আবার ফ্যান না এসি ছেঁড়ে রুম ঠাণ্ডা করতে হয় না, এতে বিদ্যুৎ খরচ ও সাশ্রয় হয়। গ্রীষ্মে এই বিষয়টি খেয়াল রাখার মত খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাহলে এক্সট্রা বিদ্যুৎ বিলের খরচ বাঁচান যায় এবং অতিরিক্ত পরিমাণের ফ্যান বা এসি ও ব্যবহার করা লাগেনা।
৫. কম্পিউটার ব্যবহারে সর্তকতা
কম্পিউটার যদি বার বার ইউজ করতে হয় তাহলে তা স্লিপ বা হাইবারনেট মোডের জন্য কনফিগার করা যেতে। ব্যবহার না হলে এটি একেবারে বন্ধ রাখা যেতে পারে। যারা নিয়মিত কম্পিউটার ব্যবহারকারী তাদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় বলা যেতে পারে।
৭. রেফ্রিজারেটর ব্যবহারে সর্তকতা
রেফ্রিজারেটরটি ২ ডিগ্রিতে এবং ফ্রিজারটি -১৮ ডিগ্রিতে রাখতে পারলে ভালো। এটি খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করবে, এবং বিদ্যুৎ অপচয় ও হ্রাস করবে, যদি তাপমাত্রা আরও কমানো হয় তাহলে কেবল বিদ্যুৎ অপচয়ই বাড়বে। পর্যাপ্ত ঠান্ডা খাবারের জন্য আসলে খুব ঠান্ডা তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়েনা।
আরেকটি বিষয় হল, ফ্রিজের দরজা একদমই খোলা রাখা যাবেনা। দরজা খোলা থাকলে ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাস কমে যায়। তখন পর্যাপ্ত ঠাণ্ডা করার জন্য ফ্রিজ বা ফ্রিজার অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়ার ব্যবহার করে, যার ফলে বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে।
আরেকটি বিষয় যা অবশ্য লক্ষণীয় তা হল খাবার ফ্রিজে রাখার আগে কিছুটা ঠান্ডা করে নিতে হবে, অতিরিক্ত গরম খাবার ফিজে রাখা যাবেনা। গরম খাবার ফ্রিজে রাখা হলে এটিকে ঠাণ্ডা করার জন্য ফ্রিজকে বেশি শক্তি কনজুম করতে হয়। তাই এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে, তাহলে ফ্রিজের তাপমাত্রা ও ঠিক থাকে সাথে বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও হয়।
আরও কিছু বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়
আজকাল বাজারে এমন কিছু সরঞ্জাম পাওয়া যায় যা, ইকো ফ্রেন্ডলি এবং এনার্জি সেভিং। আপনি এইসব সরঞ্জাম ক্রয় করতে পারেন এবং আপনার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল হ্রাস করতে পারেন। তবে এই গুলো কেনার সময় অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখবেন যে এইগুলো ঠিক আছে কিনা। তাহলে আপনি বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় এবং অপচয় রোধ উভয়ই করতে পারবেন।
খারাপ সুইচ থাকলে, সেগুলো পরির্বতন করতে হবে।
পরিশেষে
এই ছিল আজকে বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় নিয়ে সংক্ষিপ্ত লেখা। আশা করি লেখাটি উপকারে আসবে আপনাদের। আর আপনাদের জন্য টেক নিয়ে আগ্রহ বেশী থাকে টেক জ্ঞানের ক্যাটেগরির লেখাগুলো পড়তে পারেন।